নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামার আশঙ্কা জাতিসংঘের
প্রথম পাতা
মানবজমিন ডেস্ক | ১১ অক্টোবর ২০১৭, বুধবার | সর্বশেষ আপডেট: ১২:২৮
কয়েকদিন ধীরগতির পর আবার নতুন করে মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত
রোহিঙ্গাদের ঢল নামবে বাংলাদেশে। এই ধকল সামাল দিতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে
কাজ করছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর)। জেনেভায়
গতকাল সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র আদ্রিয়ান
এডওয়ার্ডস। তবে এরই মধ্যে বাংলাদেশে ওইসব বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নতুন
করে আসার গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। আদ্রিয়ান এডওয়ার্ড বলেছেন, আগামী কয়েকদিনে
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত দেশত্যাগী এসব রোহিঙ্গার ঢল নামতে পারে বাংলাদেশে। এ
পরিস্থিতিকে সামাল দিতে ট্রানজিট সেন্টার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করছে
ইউএনএইচসিআর। বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডস’কে উদ্ধৃত করে ইউএনএইচসিআর বলেছে,
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বেশ কতগুলো স্থল পয়েন্ট দিয়ে কমপক্ষে ১১
হাজার রোহিঙ্গা হঠাৎ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে
সংস্থাটি বলেছে, নতুন এসব রোহিঙ্গার বেশির ভাগই রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে
বুথিডাং এলাকার। মংডু থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পূর্বে বুথিডাং। এবার যেসব
রোহিঙ্গা এসেছেন তারা বলছেন তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। হত্যা করা
হচ্ছে মানুষ। একটি বালকের গলায় এ সময় দেখা গেছে বড় এক ক্ষত। বাংলাদেশে
পৌঁছানোর জন্য তাদের টানা ১৪ দিন হাঁটতে হয়েছে। সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তারা
যে যা পেরেছেন তা-ই সঙ্গে করে এনেছেন। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ছেলেমেয়েকে। নাফ
নদ পার হওয়ার আগে তাদের পাড়ি দিতে হয়েছে বিস্তৃত জলাভূমি। অনেক নারী ও শিশু
সাঁতরাতে জানে না। এক্ষেত্রে ‘স্বেচ্ছাসেবক সাঁতারুদের’ পিঠে চাপতে হয়েছে
তাদের। এসব স্বেচ্ছাসেবক তাদের পিঠে করে নদী পার করে দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার
প্লাস্টিকের ব্যাগ বা বস্তা ফুলিয়ে তাতে চেপে নদী পার হয়েছেন। কেউবা
ইউএনএইচসিআর-এর দেয়া তারপুলিন ব্যবহার করে ভাসমান করেছেন। তারপর তার ওপর
চড়ে পাড়ি দিয়েছেন নদী। ইউএনএইচসিআর আরো বলেছে, নতুন আসা এসব রোহিঙ্গাকে
সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের জন্য নির্ধারিত কুতুপালং ও
বালুখালিতে অবস্থিত শিবিরে। তাদের প্লাস্টিক শিট ও পানি বহনের জন্য
জেরিক্যান সরবরাহ দিয়েছে ইউএনএইচসিআর। পাশাপাশি এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ
সরকার ও অংশীদারদের সঙ্গে মিলে খাদ্য, পানি ও স্বাস্থ্যসেবাসহ সব জরুরি
সেবা দিচ্ছে ইউএনএইচসিআর। আরো রোহিঙ্গা আসার যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তা
সামাল দিতে প্রবেশ পথগুলোতে প্রথমেই ছোট ছোট ফার্স্ট এইড স্টেশন বসাতে
রাজি হয়েছে রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশন (আরআরআরসি)। সেখান
থেকে পানি সরবরাহ ও জরুরিভিত্তিতে বড় ধরনের কোনো চিকিৎসা দেয়ার বিষয়টিতে
নজর রাখা হচ্ছে। উপরন্তু কুতুপালংয়ের বর্ধিত অংশে ট্রানজিট সেন্টার বসাতে
ভূমি বরাদ্দ দিয়েছে আরআরআরসি। এক্ষেত্রে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে সমন্বয়ে
অংশীদার হিসেবে থাকছে ডব্লিউএফপি, ইউনিসেফ, আইওএম, ডব্লিউএইচও, আইসিআরসি
এবং এসিএফ।
No comments:
Post a Comment