ভূতের গল্প | Horror Story
ভূতের গল্প | Horror Story
একটি সত্য ঘটনাঃ ঘটনাটা বেশ কিছুদিন আগের। ঢাকার ভেতরে একটা রেলষ্টেশন ধরে হাটছিলাম। প্রচন্ড গরমের একটা রাত। মন বিক্ষিপ্ত হওয়ার কারনে আনমনে হাটছিলাম। মাথায় নানাবিধ চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল। ঘড়িতে তখন প্রায় রাত সাড়ে ১০টা বাজে। ঢাকা শহরের জন্য খুব বেশী গভীর কোন রাত নয়। হাটতে হাটতে একসময় খুব ক্লান্তি অনুভব করলাম। রেল লাইন যেখানে বাক নিয়েছে সেখানে একটা বাজার,ওখানে বসলাম। ঢাকায় সাধারনত রেল লাইনের পাশে বাজার হয়। কিন্তু এখানে দেখলাম ঠিক রেললাইন টা জুড়েই বাজার। বলতে গেলে লাইনের দুপাশ ঘিরেই বাজার। অনেক মানুষ,এগিয়ে গেলাম। বেশ কিছু চায়ের দোকান। প্রায় সবগুলোই মানুষের ভীড়ে ঠাসা। নিজেকে কিছুটা আড়ালে রাখার জন্য মোটামুটি ফাকা একটা দোকানে বসলাম। দোকানি-কে চা দিতে বলে আশেপাশে তাকালাম। নানা ধরনের মানুষ। কথা বলছে,ঝগড়া করছে, সাধারনত যা হয়ে থাকে। দোকানি চা দিল। উঠে গিয়ে চা হাতে নিয়ে বসলাম। চা খাচ্ছি,বসে বসে মোবাইল নিয়ে নড়াচড়া করছি। হঠাৎ খেয়াল করলাম,আমি যে দোকানটাতে বসে আছি সেখানে একটু করে মানুষের ভীড় বাড়ছে। অনান্য দোকানের সামনে যারা বসা ছিল প্রায় অনেকেই উঠে এসে আমার আশেপাশে দাড়িয়ে চা খেতে লাগল। খেয়াল করলাম প্রায় সকলের পরনেই লুঙ্গি। যদিও অবাক হওয়ার মত কিছু নেই, তবুও মনে হল সবাই ইচ্ছে করেই একই ধরনের পোষাক পরেছে। ফালতু চিন্তা করছি ভেবে উঠে দাড়ালাম। জিজ্ঞেস করলাম কত হয়েছে বিল। মনে হল এ কথায় সবাই আমার দিকে তাকাল, সরাসরি নয় আড় চোখে। অস্বস্তি বোধ করছিলাম। টাকা বের করার জন্য পকেটে হাত ঢোকালাম। দোকানী-কে আবার জিজ্ঞেস করতেই সে বলল বিল লাগবে না। আমি রেগে গেলাম। আমি বললাম -লাগবেনা কেন ? আমিতো বিশেষ কেউ নই যে আমার বিল লাগবেনা। মানিব্যাগ বের করব, লক্ষ্য করলাম দোকানী আমার চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে আছে। সবচেয়ে বড়ধাক্কা খেলাম যখন বুঝলাম চেষ্টা থাকা সত্বেও আমি মানিব্যাগ বের করতে পারছি না। আমার ভয় লাগা শুরু হল। দোকানী আমার দিকে তাকিয়ে বিদ্রুপেরহাসি হাসল। আমি মানিব্যাগ বের করার চেষ্টা অব্যাহত রাখলাম। ভাবলাম কোন কারনে আমি নিজের উপর দূর্বল হয়ে পড়েছি। এক সময় মানিব্যাগ বের হল, ২০ টাকার একটা নোট বিস্কুটের টিন গুলোর উপরে রাখলাম এবং কিছুটা দ্রুত দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম। রেল লাইন পার হয়ে অল্প কিছু দূর এসেছি। হঠাৎ কি মনে হতেই ফেলে আসা বাজারের দিকে পেছন ফিরে তাকালাম। ওই দোকানে আগের মতই ভীড়। অবাক হয়ে দেখলাম দোকানের লোকগুলো আমার দিকেই তাকিয়ে আছে, বিশেষ করে দোকানী। সে দোকান থেকে নেমে আমার পথের দিকে তাকিয়ে আছে। ভয় পেয়ে গেলাম,প্রচন্ড ভয়। ইচ্ছে হচ্ছিল ছুট লাগাই। কিন্তু কেন জানি দৌড় দিলাম না। জোরে জোরে পা চালাতে লাগলাম। অল্প একটু এগিয়েছি, সামনে একটা রিক্সা। মনে হল আমি জানে পানি ফিরে পেলাম। হুড়মুড় করে রিক্সায় উঠে পড়লাম। গন্তব্য স্থানের নাম বলতেই রিক্সা যেন হাওয়ার গতিতে ছুটতে লাগল। ইচ্ছে হল রিক্সাওয়ালা-কে ধমক দেই, এত জোরে চালানোর জন্য। তবে ভালই লাগছিলো, তাই কিছু বললাম না। মনে হচ্ছিল আমার পেছনে অশুভ কিছু ধাওয়া করছে আর পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছে রিক্সা। বেশ কিছুক্ষন যাওয়ার পর একটা শান্তি শান্তি ভাব চলে এল। ঘুম ঘুম লাগছিলো। ঘড়িতে চেয়ে দেখলাম ১১টার বেশী বাজে। আমি যেখানে নামব সেখানে পৌছানোর জন্য রিক্সাওয়ালা কে পথ বলে দিতে হয়। কিন্তু রিক্সাওয়ালা যেন সব চেনে, আমাকে ঠিক দোরগোড়ায় পৌছে দিল। আমারকাছে রিক্সা ভাড়া কিছু কম ছিল। তাছাড়া এতরাতে রিক্সাপাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার মনে করে রিক্সাওয়ালা-কে কিছু বাড়িয়ে দিতে ইচ্ছে হল। রিক্সা থেকে নেমে বললাম -আপনি একটু দাড়ান,আমি টাকা নিয়ে আসি। এই প্রথম আমি রিক্সাওয়ালার চেহারা দেখলাম। মনে হল আগেও কোথাও দেখেছি। কোথায় দেখেছি চিন্তা করতে করতে আমি টাকা নিয়ে বের হলাম। দরজা খুলে বেরব, এক মূর্হৎ থামলাম। মনে পড়ল বাজারের দোকানী এই লোকটিই। সাথে সাথে ঝড়ের বেগে দরজা খুলে বের হলাম, কেউ নেই ওখানে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল। পরের দিনদুপুরে আমি আর একজনে সাথে নিয়ে ওই লাইনে গেলাম। কিন্তু অনেক খোজাখুজি করেও ওই মোড় বা বাজার কিছুই খুজে পাইনি।
সমাপ্ত।
পোস্টে লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার না হলে আমরা আপনাদের সাথে ভৌতিক গল্পশেয়ার করার উৎসাহ হারিয়ে ফেলি । তাইলাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করুন ।।
ভূতের গল্প | Horror Story
আমাদের গ্রামের পাশদিয়ে একটি কাঁচা সড়ক সরাসরি যুক্ত ছিলফরিদপুর থানার সাথে। সড়কটা ছিল৩টি গ্রামের কৃষকদের কৃষি জমির মাঝবরাবর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের কোন একসময় পাকিস্তানী সৈনিকদের একটি ছোটবাহিনী সেই রাস্তা দিয়ে গ্রামে প্রবেশকরার চেষ্টা চালিয়ে ছিল।কিন্তুআমাদেরগ্রামের সাথে রাস্তাটির সংযোগ সড়কেরএকটা অংশকাটা থাকায় তারা গ্রামে প্রবেশকরতে ব্যর্থ হয়। তারা সড়ক বরাবর থানারদিকে এগিয়ে যায় এবং স্বল্প সময়েও তাদেরহত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যায়। মৃতের সঠিকসংখ্যা কেউ বলতে পারে নি। কারনপাকিস্তানী সৈন্যরাহত্যা শেষে লাশগুলো রপাশে একটা গভীর কুয়ারমধ্যে ফেলে দিয়ে যায়। কুয়োটা ছিলএকটা হিজল গাছের পাশে। সেই হিজল গাছেরআশেপাশের ২/৩ মাইল শুধুই কৃষি জমি। কোনবাড়ি ঘর নেই। সেই কুয়োর কোন নিশানা আজপাওয়া না গেলেও হিজল গাছটা ঠিকইসাক্ষী হয়ে আছে সেইনৃশংস হত্যাযজ্ঞের।এইহিজল গাছ আর কুয়ো নিয়ে অনেক গল্প চালুরয়েছে গ্রামে। রাতের বেলা অনেকেইনাকি এই গাছের পাশ দিয়ে যাবার সময়"পানি, পানি" বলে আর্তনাদ করতে শুনেছে।আজও নাকি হিজল গাছেরপাশ দিয়ে আসারসময় মানুষ পথ হাড়িয়ে ফেলে। হিজল গাছথেকে গ্রামের দুরত্ব আধা মাইলের মত।ফরিদপুর থেকে রাতের বেলা বাড়ি ফেরারসময় আশরীর কণ্ঠ শুনেছে এমন অনেক মানুষেরদেখা পাওয়া যায় গ্রামে। এমনকি রাতেরবেলা গ্রামেফিরতে গিয়ে আধা মাইল পথসারা রাতেও পার হতে পারে নি, এমনমানুষও কম নেই গ্রামে।বেতুয়ান গ্রামের পাশের গ্রাম রামনগর।রামনগর গ্রামের আক্কাস নামের এক লোকতার ছাগল হারিয়ে ফেলেছে। সারা দুপুরছাগল খোজা-খুজির পরবিকেলে সে জানতে পারল তার ছাগলবেতুয়ানের সীমান্তে ঢুকে একজন কৃষকেরসবজিরক্ষেত নষ্ট করছিল, তাই বেতুয়ানেরচকপহরি (গ্রামে জমি পাহারা দেওয়ার জন্যনিয়জিত প্রতিরক্ষাবাহিনী) তার ছাগলধরে নিয় গেছে।ঘটনা শুনে রাগে ক্ষোভে কোন কিছু না ভেবেইবেচারা রওনা দিল বেতুয়ানের দিকে। তখনমাগরিবের আযান হয়ে গেছে।রাগের মাথায় রওনা দিলেও একসময় আক্কাসমিয়ার হঠাৎ করেই মনে পরে গেল হিজলগাছের কথা। আরে সামনেই তো হিজল গাছ! ঐ-তো দেখা যাচ্ছে। সাথে সাথে তার সমস্তশরীরে কাঁটা দিয়ে উঠল। আক্কাস মিয়া আরসামনের দিকে অগ্রসর হল না। কারণ ছাগলেরচাইতে জীবন অনেক বড়। ছাগল তো কালকেওআনা যাবে। কিন্তু জীবন…ভয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যাবার জন্য যেইপা বাড়াবেন ঠিক তখনি তার মনে হল কেউএকজন তাকে ডাকছে।-ভাই কি বেতুয়ান যাবেন?আক্কাস মিয়া চমকে উঠে জোর গলায় বলল,-কেডা আপনে?-ভাই আমি মোক্তার। আমার বাড়ি বেতুয়ানেরশেষ মাতায়। ঐ ইজল গাছের থেনে মাইলখানিক ফাঁকে। আপ্নের বাড়ি কোনে?-আর কয়েন্না বাই। আমার বাড়ি রামনগর।আপ্নেগরে গাওয়ের চকপোউরি আমারবরহি(ছাগল)খান দোইরা লিয়্যা গ্যাছে।সেই বরহি আইনব্যারি যাচ্ছিলাম তিন্তুকআজকা আর যাব লয়। রাইতম্যালা হয়্যা গেছে।-ঐ চিনত্যাতেই তো ভাই একা জাসসিন্যা।গেছিল্যাম আপ্নেগরেগাওয়েরহাঁটে।ফিরতি ফিরতি বেলাগরা আইলো। এহনএকা যাতি ক্যাবা জানি লাগতেছে।তারচে চলেন ভাই আমারবাড়িত যাই। রাইতখান থাইকা কাইলকা বরহি(ছাগল)লিয়্যা বাড়ি জায়েন্নে।আক্কাস মিয়া দেখল প্রস্তাবটা খারাপ না।তাছাড়া আকাশে মেঘও করেছে। এই অবস্থায়বাড়ি ফিরে যাওয়া ওঝামেলা। তাই সে আরকথা না বাড়িয়ে লোকটার সাথে রওনা দিলো।দুজনে গল্প করতে করতে এক সময় হিজল গাছেরপ্রায় কাছে চলে এলো। এমন সময় হঠাৎ করেইমোক্তার নামের লোকটা কাঁদারমধ্যে পরে গেল। সাথেসাথে আক্কাসমোক্তারকেহাত ধরে তুলতে গিয়ে চমকে উঠল।একি, এই লোকটার হাত এতো ঠাণ্ডা কেন?মানুষের শরীর কি এতোঠাণ্ডা হয়?মোক্তার আস্তে করে উঠে দাঁড়িয়েবলল,-দুরা। সারা গায় ক্যাদো লাইগা গেল। চলেনভাই সামনের কুয়োত যাই। হাত মুকধুইয়া আসি।কথাটা বলেই মোক্তার আক্কাসের উত্তরেরঅপেক্ষা না করেই কুয়োর দিকে পা বাড়াল।আক্কাসের শরীরে ভয়ের শীতল স্রোতবয়ে গেল। কুয়োটা অনেক দিন আগে থেকেইপরিত্যক্ত।সেখানে পানি আসবে কোথা থেকে? হঠাৎআকাশে বিদ্যুৎ চমকে উঠল। বিদ্যুতেরআলোতে আক্কাস স্পষ্ট দেখতে পেল,মোক্তারের পা নেই।সারা শরীর কেমনজানি একটা ঝাঁকি দিয়ে উঠল আক্কাসের।তাহলে মোক্তার মানুষ না! আবারএতো রাতে তাকে কুয়োর দিকে নিয়ে যাচ্ছে;তার মানে কি সে আইষ্ঠাখোর ভূত!আক্কাস আর এক মুহূর্তও দেরি করল না।সোজা মাটির উপর চোখ বুজে টানটানহয়ে শুয়ে পড়ল। (গ্রামে কথিত আছে, ভূতবা খারাপ আত্মা মাটিস্পর্শ করতে পারেনা।তাদের ক্ষমতা মাটির একহাত উপরে)কিছুক্ষণ পর আক্কাস শুনতে পেলো কেউ একজনন্যাকা সুরে আক্কাসকে উদ্দেশ্য করে বলছে,"কুত্তার বাচ্চা বাইছা গেলু। মাটির উপরনা শুলি আজক্যা তোক কুয়োরমদ্দি গাইরা থুল্যামনে।"ঠিক এভাবেই পরের দিনসকাল পর্যন্তমাটির উপর শুয়েছিল আক্কাস মিয়াঁ।হয়তো আজও রাতের বেলা কোন মানুষ সেইআধা মাইল পথ পার হতে পারেনি।।
ভূতের গল্প | Horror Story
ঘটনাটি ঘটেছিলো আমারদাদির সাথে। আমার দাদাছিলেনএকজনওঝা টাইপের লোক। তিনি জিনতারাতে পারতেন। তিনি যখনইজিনতারাতে বাড়ির বাইরে যেতেন তখনব াড়ি শক্তকরে বন্ধকদিয়ে যেতেনএবং সেদিন বাড়ি থেকেবের হওয়া সকলেরমানা থাকতো। দাদা একদিন খুবতাড়াহুড়ারসহিত জিন তারাতে রওনা হলেন। সেদিনতিনি বাড়ি বন্ধকদিতে ভুলেযান।তিনি যেইবাসায় জিন তারাতে গিয়েছিলেন সেইবাসায় পৌঁছতে পৌঁছতে তার রাত৮টারমতো বেজে যায়। তিনিঅনেকসাধনা করে একসময় জিনটাকে পরাজিত করেনএবং জিনটা যাকে ভর করেছিলো তার দেহথেকে জিনটাকে ছাড়িয়ে দেন।জিনটাকে ছাড়িয়ে দিতেই সেটা হুংকারদিয়ে বলে, “আমিগেলাম তোর বাড়িতে!”তো দাদা উত্তর দিলেন, “যা, তুই যা পারিসকর!” কিন্তু সাথে সাথেই দাদার খেয়াল হলযে তিনি আজ তাড়াহুড়ায় বাড়ি বন্ধকদিয়ে বের হতে ভুলে গেছেন। এরইমধ্যে জিনটা দাদার বাড়িতে এসে দাদাররূপও কণ্ঠ নিয়ে ঘরেরবাইরে দাঁড়িয়ে দাদিকে ডাক দিলেন,“জমিনা, বদনাটা নিয়া একটু আসো তো!”দাদিভাবলেন দাদা হয়তোটয়লেটে যাবেন আরগ্রামের টয়লেটগুলো বাড়ি থেকে একটুদূরে হয়। দাদি পানি নিয়ে বের হয়ে খেয়ালকরলেন যে দাদা টয়লেটেরদিকেনা গিয়ে বাগানেরদিকে চলে যাচ্ছেন।দাদি সাথে সাথে বুঝতে পারলেনযে এটা দাদা নয়। তাই তিনি দ্রুত ঘরেরদিকে চলে আসতে লাগলেন।হটাতএকটা দমকা বাতাসে দাদির হাতেরকুপিটা নিভে গেলো। তিনি দৌড় দিলেন ঘরেরদিকে। কিন্তু জিনটা একটানেদাদিকেউঠানেরপাশ থেকে তুলে নিয়ে বাড়ির পাশেরপুকুরে ফেলে দিলো এবং চুবাতে শুরু করলো।তখনবাড়িতে আমার ফুফু এবং ফুফা ছিলেন।দাদি বিপদের মুহূর্তে মত্র একবার বড় ফুফুরনাম ধরে ডাক দিতে পেরেছিলেন।তিনি “আকলিমা” বলে ডাক দেনএবং সৌভাগ্যবশতসেই ডাক আমার ফুফুরকানে পৌঁছায়। আমার ফুফুএবংফুফা দৌড়ে এসে দেখেন দাদি পুকুরেরমাঝে অজ্ঞান অবস্থায় ভাসছেন। এরপরতারা দাদিকে দ্রুত উদ্ধারকরে ঘরে নিয়ে যানএবং সেবা চিকিৎসা করে দাদিকে করে তোলাঘটনা এখানে শেষ হলে ভালো হতো। কিন্তুএরপরথেকে দাদি প্রায়ই কিছুভয়ঙ্কর স্বপ্নদেখতে লাগলেন। দাদা তাই আমাদেরপুরো বাড়ি শিক দিয়ে দেন এবংসন্ধ্যারপরকারো বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধকরে দেয়া হয়। এরপর দাদা জীবিতথাকাকালীন সময়ে আর কিছু ঘটেনি।দাদা মারা যাওয়ারপরথেকে প্রতিবেশীরাকেউ রাত২/৩টারদিকে বাড়ির বাইরে বের হলে দেখতে পানযে, সেই পুকুরের পাড়ে আমার দাদারপ্রতিরুপি কেউ একজন বসে আছে। হয়তো ঐটাইসেই জিনটা যার প্রতিশোধনেয়া এখনো শেষহয় নি।অথবা হয়তো এটা দাদারআত্মা যা আমাদেররক্ষা করারজন্য এখনো আসে।
ভূতের গল্প | Horror Story
সত্যি কাহিনী অবলম্বনে-হৃদয় নাড়া দেয়ার মত গল্প।পুরোটা পড়ুন- ... ...একজন ডাক্তারএকটি জরুরী সার্জারির জন্য তাড়াহুড়ো করে আর একডাক্তারকে হাসপাতালে ডেকেগতিতে হাসপাতালে পৌঁহাসপাতালে ঢুকেইসে নিজেকেদ্রুত প্রস্তুত করে নিল সার্জারির জন্য।এরপর সার্জারির ব্লকএগিয়ে সে দেখল রোগীর( একটি ছোট্ট ছেলে )বাবা ওখানেপায়চারি করছে দ অপেক্ষায় ,ডাক্তার কে দেখামাত্রলোকটি চেঁচিয়ে উঠল-...আপনার আসতে এত দেরি লাগে?দায়িত্ববোধ বলতে কিছুআছে আপনার? আপনি জানেন আমার ছেলেএখানে কতটা শোচনীয়অবস্থায় আছে ????ডাক্তার ছোট্টএকটা মুচকি হাসি হেসে বলল-"আমি দুঃখিত,আমি হাসপাতাল এছিলাম না,বাসা থেকে তাড়াহুড়ো করে এলাতাই খানিক দেরি হল, এখনআপনিযদি একটু শান্ত হন, তবে আমি আমার কাজ টা শুরুকরি ?"লোকটি এবার যেন আরওরেগে গেলো,ঝাঁঝাঁলো স্বরে বলল-"ঠাণ্ডা হব? আপনার সন্তান যদি আজএখানে থাকতো?আপনার সন্তান যদি জীবনমৃত্যুরমাঝে দাঁড়াইয়া থাকতো,তবে আপনি কি করতেন? শান্ত হয়ে বসে থাকতেন ??"ডাক্তার আবার হাসলেন আরবললেন"আমি বলব পবিত্রগ্রন্থে বলা হয়েছে মাটি থেকেআমাদের সৃষ্টি আর মাটিতেইআমরা মিসে যাব ! ডাক্তার কাউকে দীর্ঘ জীবনদান করতে পারেননা আপনি আপনারসন্তানের জন্যপ্রার্থনা করতে থাকুনআমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা টা করব ।"লোকটি পুনরায় রাগতস্বরে বলল-"যখন আপনারটেনশন না থাকে তখন উপদেশদেয়া সহজ ই !!"এরপর ডাক্তার সাহেব সার্জারিররুম এ চলে গেলো,২ ঘণ্টার মত লাগলো,শেষে হাসি মুখে ডাক্তাহাসি মুখে বেরহয়ে এলেন,"আলহামদুলি ল্লাহ অপারেশনসফল"এরপরলোকটির উত্তরেরঅপেক্ষা না করেই ডাক্তারআবারবলে উঠলেন-"আপনার কোন প্রশ্নথাকলে নার্স কে জিজ্ঞেসকরুন",বলে তিনি চলে গেলেন ।এরপরলোকটি নার্সকে বললেন- "ডাক্তার এত ভাব নেন কেন?তিনি কি আর কিছুক্ষণএখানে দাঁড়াতে পারতেন না?যাতে আমি ওনাকে আমারসন্তানএর ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করতাম ।"নার্স কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেনআরজানালেন- ডাক্তার এরছেলে আজ সকালে মারা গেছেনরোড এক্সিডেন্ট এ,তিনি আপনার ফোন পেয়েওনারছেলেরজানাজা থেকে উঠে এসেছেন ,এখন আবার দৌড়ে চলে গেলেন-কবর দিতে । নৈতিক শিক্ষা :-একজন মানুষ কে কখনো তারবাইরের আচরণ দেখে যাচাইকরবেন না, কারণআপনি কখনইজানেন না তিনি কিসেরমাঝে আছেন ।শেয়ার করতে ভুলবেন না ।
ভূতের গল্প | Horror Story
পৃথিবীর অন্যতম ভৌতিক জায়গার নামবলতে গেলে ইংল্যান্ডের শেরবরনের এইপ্রাচীন দুর্গের কথা বলতে হয়।।১২ শতকে নির্মিত এইদুর্গকে ঘিরে প্রচলিত আছে নানা মিথএবং গল্পকথা।। মধ্যযুগে এইদুর্গে স্মরণকালেরসবচেয়ে বেশি মানুষকে খুন করা হয়েছে।।বন্দীদের টর্চার করার জন্য এই দুর্গেরসেলারে নির্মিত একটি গুপ্তঘর তখনকারদিনে আতঙ্কের কারণ ছিলো।।এই গুপ্তঘরটি আবিষ্কার করা হয়অনেক পরে।। ততদিনে দুর্গের পূর্বের প্রতাপআর নেই।। আবিষ্কার করার পরকি পাওয়া যায় জানেন?? এক মাইললম্বা একটি সুড়ঙ্গ ভর্তি লাশেরকঙ্কাল।। সবগুলো সেই টর্চাররুমে মারা যাওয়া বন্দীর লাশহিসেবে চিহ্নিত করেন ইতিহাসবিদরা।।ইতিহাস সাক্ষী যে এখানে খুন হয়েছেনরাজা থেকে শুরু করে যুদ্ধবন্দী অনেকসেনাপতি এবং সৈন্য।। দুর্গের আশেপাশেরবাসিন্দারা দুর্গটি এড়িয়ে চলেন।।বলা হয়, প্রতি পূর্ণিমা রাতে দুর্গেরছাদে নাকি একদল সৈন্যকে দেখা যায় যুদ্ধেরসরঞ্জাম হাতে।। এইঘটনা চাক্ষুষ করেছেন এমন মানুষের অভাবনেই।। এছাড়াও দুর্গেরনিরাপত্তা কর্মীরা জানান, দুর্গ থেকে গভীররাতে ভেসে আসে অসহায় নিপীড়িত মানুষেরচিৎকার এবং কান্নার শব্দ।।অনুমতি না থাকায় রাতে দুর্গেরভেতর ঢোকা নিষেধ।। তবে অনেকনিরাপত্তা কর্মী এই দুর্গে কাজ করা অবস্থায়মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।। তাদেরমাঝে কেউ কেউ আত্মহত্যা করেছেন।। তেমনইএককর্মী "আইনেল সিউঞ্জার"আত্মহত্যা করার আগে একটি নোটলিখে রেখে যান।। সেই নোট লেখা ছিলোঃ"গতকাল রাতে দুর্গে চিৎকারেরআওয়াজ শুনতে পেয়ে আমি এবং মাইকেলবাধা অমান্য করে দুর্গের প্রধান দরজারসামনে যাই।। দরজা রাতে বন্ধকরে দেয়া হলেও তখন আমরা দেখতে পাইদরজাটি পুরোপুরি খোলা।। আমাদের চোখেরসামনে পড়ে ছিলো অগণিত লাশ।।প্রত্যেকটি বিবস্থ অবস্থা।। কোনটারমাথা নেই তো কোনটার সারা শরীর জায়গায়জায়গায় বিচ্ছিন।।বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো মানুষের লাশদেখতে পাই আমরা।। হটাত আমাদেরচোখের সামনে কিছু লাশ উঠে দাঁড়ায়এবং চিৎকার করে টলতে টলতে আমাদেরদিকে এগিয়ে আসে।। তাদের একটা শব্দইআমরা বুঝতে পারি, তা হলো, "আমাদেরমুক্তি দাও।। আমাদের মুক্তি দাও।।"আমরা সেখান থেকে দ্রুত চলে আসি।।মাইকেল নিরাপত্তা দরজারসামনে এসে হাঁটুগেড়ে বমি করতে করতে জ্ঞান হারায়।।সকালে কোনোমতে আমরা নিজ নিজ বাসায়ফিরে আসি।। এই ঘটনার পরথেকে আমি মানসিক অশান্তির মধ্যদিয়ে যাচ্ছি।।আমার চারপাশে মৃতমানুষের অস্তিত্ব উপলদ্ধি করছি।।আমার কানে তারা ফিসফিসকরে বলে চলেছে "আমাদের মুক্তি দাও।।আমাদের মুক্তি দাও।।"এটা পাওয়া "আইনেল সিউঞ্জার" এর লাশেরপাশে।। সিউঞ্জার নিজের হাতের রগকেটে ফেলে আত্মহত্যা করা।।এবং মৃত্যুর আগে সারা ঘরে নিজের রক্তদিয়ে বিচিত্র সবনকশা একে দিয়ে যায়।। সেইনকশাগুলো বেশিরভাগই টর্চাররুমে আঁকা নকশা এবং তার যন্ত্রপাতির মতো।।
ভূতের গল্প | Horror Story
আমার
এবারের ঘটনা ২০০৪সালের। আমাদের গ্রামটি আমাদের ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় গ্রাম এবংএটি পূর্ব পশ্চিম
একটু বেশিই লম্বা ।হঠাত্ করেই গ্রামের পূর্ব দিকে কলেরার প্রকোপ শুরু হয়
।বিগত ২৫ বছরে গ্রামে কলেরা ছিলনা ।সাতদিনের ভিতরে পূর্ব পাশের পাঁচজন মারা
যায় ।অনেক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেবার পরও পূর্ব পাশের প্রতিটি বাড়ির
কেউনা কেউ আক্রান্ত হতে লাগল ।রোগটি ধীরে ধীরে পশ্চিম পাড়ার দিকে আসতে
লাগল (আমাদের বাড়িও পশ্চিম পাড়াতে) তখন পশ্চিম পাড়ার মাতব্বরেরা মিলে
সিদ্ধান্ত নিলো যে কবিরাজ এনে রাশ দেবার ব্যবস্থা করতে হবে ।যথারীতি কবিরাজ
আনা হলো,কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা ।তখন আমাদের গ্রামের এক পুরাতন
কবিরাজ যে কিনা অনেকদিন হলো ফরিদপুর চলে গেছে,তাকে নিয়ে আসা হলো ।সে এসেই
ঘোষনা করে দিল যে রাত এগারোটার পর যেনো কেউ বাড়ির বাহিরে বের না হয় ।রাত
দশটার দিকেই পাড়ার প্রতিটা মসজিদের মাইকে ঘোষনা করে দেওয়া হতো যে সবাই
যেনো ঘরে চলে যায় ।আসলে মাইকে ঘোষনা দেবার প্রয়োজনই ছিলোনা ।কারন সবাই
এতোটাই ভীত ছিল যে সন্ধ্যার সাথে সাথে বাড়ির সব কাজ সেরে ঘরে ঢুকে পড়ত
।আর চারিদিকে নেমে আসত এক অদ্ভূত নীরবতা ।এমনকি সন্ধ্যার পর গ্রামের
দোকানগুলোওখোলা থাকত না ।এশার জামাতেও লোক হতো অনেক কম ।বাবা-মা আমাদেরকে
বের হতে দিতেন না ।তারপরও আমরা মাঝে মাঝে লুকিয়ে বের হতাম ।দেখতাম কবিরাজ
তার সাঙ্গপাঙ্গসহ মশাল জ্বালিয়ে ধূপের ধোঁয়া উড়িয়ে পাড়ার এমাথা ওমাথা
দৌড়াদৌড়ি করতো আর একঅপার্থিব সুরে অদ্ভূদ সব মন্ত্র উচ্চারন করছে
।পরিবেশটা এতোটাই অদ্ভুদ আর ভয়াবহ ছিলযে ভাবলে এখনো ভয় লাগে ।কবিরাজ এক
এক দিন এক এক মহল্লা বন্ধ করতেন,যাতে ঐ পাড়ায় কলেরা বা ওলাবিবি না ঢুকতে
পারে ।এভাবে পাড়ার প্রায় সবগুলা মহল্লা বন্ধ করা হলো।এরই মাঝে একরাতে
আমার মা শুনতে পান কে যেনো আমাদের বাড়ির গেটের ওপাশে রাস্তায় দাঁড়িয়ে
উঃউঃউঃউঃ...করে কাঁদছে ।মা ভাবল কোনো মহিলা বোধহয় সমস্যায় পড়ে কাঁদছে
।আসলে মা তখন পরোপকারের নেশায় রাশের কথা খেয়াল ছিলনা ।মা ঘর হতে বের হয়ে
যতই গেটের দিকে যাচ্ছিলেন ততই একটা পচা গন্ধ পাচ্ছিলেন,যা অনেকটা মলের
গন্ধের মত,কিছুটা মাংস পঁচাগন্ধের মত ।মা যখন গেটের পাশে দাঁড়ান তখন গেটের
ফাকঁ দিয়েদেখেন যে রাস্তার ওপাশে ইলেক্ট্রিক পোলের সাথে হেলান দিয়ে একটি
বিশালাকার মহিলা দাঁড়িয়ে আছে যার উচ্চতা প্রায় সাত ফুটের এর মত ।এর গা
থেকেই এমন গন্ধ বের হচ্ছিল ।মহিলার ভয়ংকর চেহারা দেখে মা কিছুটা পিছিয়ে
আসেন ।মহিলাটি ইনিয়েবিনিয়ে কাঁদছিল আর বলছিল "তোরা আমাকে থাকতে দিলিনা,এই
গ্রাম আমার ভাল লাগছিল,আমার আরো লাশদরকার ছিল '' উঃউঃউঃ আমি আজই এই গ্রাম
ছেড়ে চলে যাবো উঃউঃউঃ ।এমন সময় মাররাশের কথা মনে পড়ে যায় আর প্রচন্ড
ভয় পেয়ে মা ঘরে চলে আসেন ।ঘটনাটা এখানেই শেষ না ।
মা একটি গ্রাম্য সমিতির প্রথান ।পরদিন সকালে কিস্তি দিতে এসে এক প্রতিবেশি(যিনি নৌকায় কাজ করেন)নাকিবলছিল কালকে রাতে একটা ভয়ের ব্যাপার ঘটেছিল ।মা জিঞ্জাসা করল কি ঘটনা ? তখন তিনি বলেনযে কাল রাতে খেপ থেকে আসার সময় দুই গ্রাম আগেই তাদের নৌকার তেল ফুড়িয়ে যায় ।তাই ১৩জন লেভারএর ৯জনই পাশের গ্রামে নেমে যায় ।তিনি যেহুতু নৌকার মালিক তাই তিনিসহ আরো তিনজন মিলে লগি মেরে মেরে নৌকাটা বাড়ির দিকে নিয়ে আসছিলেন ।এমন সময় তারা দেখেন কে যেনো গ্রামের শেষ মাথায় নদীর পাড়ে বসে আছে আর তাদেরকেই ডাকছে ।তারা ভাবল কোনো মহিলা হয়ত বিপদে পড়েছে ।তাই সাহায্য করার জন্য তাদের নৌকা পাড়ে ভিড়ান ।এমন সময় তাদের নাকেও পঁচা গন্ধটা লাগে ।তারা মনে করে পাশেই কোনো মরা জীবজন্তু নদীতে ভেসে এসেছে,এটা তারইগন্ধ ।তাই তারা গন্ধটাকে তেমন পাত্তা দিলোনা ।মহিলাটা বলল যে,তারা যদি তাকে নদীর ওপারে দিয়ে আসেতবে ভাল হয় ।তারা মহিলাকে নৌকায় উঠতে বলে । নৌকা যখন মাঝ নদীতে তখন দুর্গন্ধটা প্রকোট আকার ধারন করে ।তারাবুঝতে পারে গন্ধটা মহিলার গা থেকে আসছে।তারপরও তারা যখন মহিলার দিকে তাকাতে যায় তখন মহিলা বলে কেউ আমার দিকে তাকাবি না তাকালে ক্ষতি করে দিবো ।তাইভয়ে ভয়ে তারা মাথা নিচু করে ফেলে ।ওপারে নামিয়ে দেবার পর মহিলা বলে তোরা আমার উপকার করছিস তাই তোদের ক্ষতি করলাম না ।এটাবলেই মহিলা হাঁটতে থাকে ।এরপর হতে গ্রামের কেউ আর কলেরায় আক্রান্ত হয়নি ।মূল ঘটনা এখানেই শেষ ।
তবে এ ঘটনার চারদিন পর শনিবার ঐ কবিরাজ মারা যায় ।আশা করি ঘটনাটি আপনাদের ভাল লাগবে।
মা একটি গ্রাম্য সমিতির প্রথান ।পরদিন সকালে কিস্তি দিতে এসে এক প্রতিবেশি(যিনি নৌকায় কাজ করেন)নাকিবলছিল কালকে রাতে একটা ভয়ের ব্যাপার ঘটেছিল ।মা জিঞ্জাসা করল কি ঘটনা ? তখন তিনি বলেনযে কাল রাতে খেপ থেকে আসার সময় দুই গ্রাম আগেই তাদের নৌকার তেল ফুড়িয়ে যায় ।তাই ১৩জন লেভারএর ৯জনই পাশের গ্রামে নেমে যায় ।তিনি যেহুতু নৌকার মালিক তাই তিনিসহ আরো তিনজন মিলে লগি মেরে মেরে নৌকাটা বাড়ির দিকে নিয়ে আসছিলেন ।এমন সময় তারা দেখেন কে যেনো গ্রামের শেষ মাথায় নদীর পাড়ে বসে আছে আর তাদেরকেই ডাকছে ।তারা ভাবল কোনো মহিলা হয়ত বিপদে পড়েছে ।তাই সাহায্য করার জন্য তাদের নৌকা পাড়ে ভিড়ান ।এমন সময় তাদের নাকেও পঁচা গন্ধটা লাগে ।তারা মনে করে পাশেই কোনো মরা জীবজন্তু নদীতে ভেসে এসেছে,এটা তারইগন্ধ ।তাই তারা গন্ধটাকে তেমন পাত্তা দিলোনা ।মহিলাটা বলল যে,তারা যদি তাকে নদীর ওপারে দিয়ে আসেতবে ভাল হয় ।তারা মহিলাকে নৌকায় উঠতে বলে । নৌকা যখন মাঝ নদীতে তখন দুর্গন্ধটা প্রকোট আকার ধারন করে ।তারাবুঝতে পারে গন্ধটা মহিলার গা থেকে আসছে।তারপরও তারা যখন মহিলার দিকে তাকাতে যায় তখন মহিলা বলে কেউ আমার দিকে তাকাবি না তাকালে ক্ষতি করে দিবো ।তাইভয়ে ভয়ে তারা মাথা নিচু করে ফেলে ।ওপারে নামিয়ে দেবার পর মহিলা বলে তোরা আমার উপকার করছিস তাই তোদের ক্ষতি করলাম না ।এটাবলেই মহিলা হাঁটতে থাকে ।এরপর হতে গ্রামের কেউ আর কলেরায় আক্রান্ত হয়নি ।মূল ঘটনা এখানেই শেষ ।
তবে এ ঘটনার চারদিন পর শনিবার ঐ কবিরাজ মারা যায় ।আশা করি ঘটনাটি আপনাদের ভাল লাগবে।
একটি সত্য ঘটনা। ভুত/প্রেত/জীন বিশ্বাস না করলে পড়বেন না কেউ।
আমার বাড়ি বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পাশেই। ছোটবেলা থেকে গ্রামে গঞ্জে থেকে মানুষ আমি ভূতের ভয় নেই বললেই চলে । অনেকের মুখে শুনেছি সন্ধ্যার পর কীর্তনখোলার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকি অশরীরীর দেখা পাওয়া যায়। আমি কখনো এসব বিশ্বাস করতাম না। সেবার মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম একটা কাজে। এক পরিচিত চাচার মোটর নৌকায় গিয়েছিলাম।
বাসায় ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। চাচার গঞ্জে কাজ ছিলো দেখে আমাকে বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে নামিয়ে দেয়। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সমস্যা হবে নাকি। আমি না করি। চাচাকে বিদায় দিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে লাগলাম। সন্ধ্যা নেমেছে চারপাশে। খুব দ্রুতই রাতের আঁধারে চারপাশ ঢেকে যাবে।
আমার সাথে কোনও আলো নেই। তবে বাড়ি খুব একটা দুরের পথ না। বাকা পথে গেলে ১৫ মিনিট। আর সোজা রাস্তা দিয়ে গেলে ২৫-৩০ মিনিট লাগবে। সেইদিন বাংলাদেশের সাথে ইংল্যান্ডের খেলা ছিল। তাই আমি সময় বাঁচানোর জন্য বাকা পথ যাকে আমরা বলি শর্ট রাস্তা ধরে হাঁটা দিলাম। হনহন করে হাঁটছি।
সবাই মনে হয় বাংলাদেশের খেলা দেখছে। কাউকেই দেখলাম না পথে। প্রায় ৪-৫ মিনিট হাঁটার পর আমার পাশের একটা ঝুপে ধপ করে কি যেন পড়লো। বলতে ভুলে গেছি, শর্ট রাস্তাটা একটু জঙ্গলা টাইপের এলাকার মধ্য দিয়ে। চারপাশে ঝি ঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। আওয়াজটা শুনেই আমি থেমে গেলাম।
একদম চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম ২০ সেকেন্ড। কান খাঁড়া করে শোনার চেষ্টা করলাম কিসের আওয়াজ হল। কিন্তু কোনও শব্দ হল না আর। আমি নাছোড়বান্দা। আস্তে আস্তে পা টিপে এগিয়ে গেলাম ঝোপের দিকে। অনেকেই ভাববেন হয়তো মিথ্যা বলছি। কিন্তু ভাই আমি আসলেই অনেক সাহসী ছিলাম।
একা হাতে গভীর রাতে ২টা চোর একসাথে পিটাইছি। ভয় ডর খুব কম। যাই হোক, ঝোপের পাশে দাঁড়িয়ে উকি দিলাম। উকি দিয়েই চমকে উঠলাম। ঐ পাশে দেখলাম একটা সাদা কাপড় পড়া মহিলা ঝুঁকে আছে কিছু একটার উপর। দেখে মনে হল কোনও চারপেয়ে জানোয়ার। অন্ধকার হতে যাচ্ছে। দৃষ্টি পরিষ্কার না।
মহিলার পাশ থেকে গচ গচ শব্দ হচ্ছিলো। হাড় ভাঙার আওয়াজ কানে এলো। কড়মড় করে কি যেন খাচ্ছে। আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। জোরে চিৎকার দিয়ে বললাম, ঐ কেডা রে ? কেডা হেইখানে ?
সাথে সাথে পাই করে আমার দিকে ঘুরে গেলো মহিলাটা। ওটার চেহারা দেখার সাথে সাথে মনে হল কলিজাটা এক লাফে গলায় উঠে এলো। বহু কষ্টে নিজেকে দাঁড় করে রাখলাম। মহিলার বয়স বুঝতে পারি নি, তবে সাদা চুল, সাদা কাপড়, এবং সাড়া মুখে লেগে থাকা রক্ত এবং সামনে পড়ে থাকা একটা মাঝারি সাইজের গরুর মৃত দেহ দেখে কিছু বুঝতে বাকি রইলো না।
এরপর শুধু এতটুকু মনে আছে যে জ্ঞান হারাবার আগে জোরে কয়েকবার লা ইলাহা ইলাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর বলেছিলাম। মহিলাটা চোখের পলকে মরা গরুটা রেখে আমার দিকে এগিয়ে এলো। এরপরে আমার কিছু মনে নেই।
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে আবিষ্কার করি আমাদের বাড়ির উঠানে। সামনে এলাকার সব মুরুব্বী এবং গঞ্জের বড় হুজুর বসে আছে। উনাদের কাছে শুনতে পাই রাতে রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে আমাদের বাড়ির ৩ বাড়ির পরের রহমত আলি চাচা আমাকে দেখতে পান। এরপর আরও মানুষের সাহায্যে আমাকে বাসায় নিয়ে আসেন।
আশ্চর্যের ব্যাপার যে সেইদিন আমার থেকে একটু দূরে একটা আধ খাওয়া গরুর মৃত দেহ পাওয়া যায়। গরুটির শরীরের বাকি অংশ পাওয়া গেলেও মাথা থেকে পেট পর্যন্ত ছিল না।
আমার বাড়ি বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পাশেই। ছোটবেলা থেকে গ্রামে গঞ্জে থেকে মানুষ আমি ভূতের ভয় নেই বললেই চলে । অনেকের মুখে শুনেছি সন্ধ্যার পর কীর্তনখোলার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকি অশরীরীর দেখা পাওয়া যায়। আমি কখনো এসব বিশ্বাস করতাম না। সেবার মামার বাড়িতে গিয়েছিলাম একটা কাজে। এক পরিচিত চাচার মোটর নৌকায় গিয়েছিলাম।
বাসায় ফেরার পথে সন্ধ্যা হয়ে যায়। চাচার গঞ্জে কাজ ছিলো দেখে আমাকে বাড়ি থেকে বেশ খানিকটা দূরে নামিয়ে দেয়। আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন সমস্যা হবে নাকি। আমি না করি। চাচাকে বিদায় দিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে লাগলাম। সন্ধ্যা নেমেছে চারপাশে। খুব দ্রুতই রাতের আঁধারে চারপাশ ঢেকে যাবে।
আমার সাথে কোনও আলো নেই। তবে বাড়ি খুব একটা দুরের পথ না। বাকা পথে গেলে ১৫ মিনিট। আর সোজা রাস্তা দিয়ে গেলে ২৫-৩০ মিনিট লাগবে। সেইদিন বাংলাদেশের সাথে ইংল্যান্ডের খেলা ছিল। তাই আমি সময় বাঁচানোর জন্য বাকা পথ যাকে আমরা বলি শর্ট রাস্তা ধরে হাঁটা দিলাম। হনহন করে হাঁটছি।
সবাই মনে হয় বাংলাদেশের খেলা দেখছে। কাউকেই দেখলাম না পথে। প্রায় ৪-৫ মিনিট হাঁটার পর আমার পাশের একটা ঝুপে ধপ করে কি যেন পড়লো। বলতে ভুলে গেছি, শর্ট রাস্তাটা একটু জঙ্গলা টাইপের এলাকার মধ্য দিয়ে। চারপাশে ঝি ঝি পোকার ডাক শোনা যাচ্ছে। আওয়াজটা শুনেই আমি থেমে গেলাম।
একদম চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম ২০ সেকেন্ড। কান খাঁড়া করে শোনার চেষ্টা করলাম কিসের আওয়াজ হল। কিন্তু কোনও শব্দ হল না আর। আমি নাছোড়বান্দা। আস্তে আস্তে পা টিপে এগিয়ে গেলাম ঝোপের দিকে। অনেকেই ভাববেন হয়তো মিথ্যা বলছি। কিন্তু ভাই আমি আসলেই অনেক সাহসী ছিলাম।
একা হাতে গভীর রাতে ২টা চোর একসাথে পিটাইছি। ভয় ডর খুব কম। যাই হোক, ঝোপের পাশে দাঁড়িয়ে উকি দিলাম। উকি দিয়েই চমকে উঠলাম। ঐ পাশে দেখলাম একটা সাদা কাপড় পড়া মহিলা ঝুঁকে আছে কিছু একটার উপর। দেখে মনে হল কোনও চারপেয়ে জানোয়ার। অন্ধকার হতে যাচ্ছে। দৃষ্টি পরিষ্কার না।
মহিলার পাশ থেকে গচ গচ শব্দ হচ্ছিলো। হাড় ভাঙার আওয়াজ কানে এলো। কড়মড় করে কি যেন খাচ্ছে। আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। জোরে চিৎকার দিয়ে বললাম, ঐ কেডা রে ? কেডা হেইখানে ?
সাথে সাথে পাই করে আমার দিকে ঘুরে গেলো মহিলাটা। ওটার চেহারা দেখার সাথে সাথে মনে হল কলিজাটা এক লাফে গলায় উঠে এলো। বহু কষ্টে নিজেকে দাঁড় করে রাখলাম। মহিলার বয়স বুঝতে পারি নি, তবে সাদা চুল, সাদা কাপড়, এবং সাড়া মুখে লেগে থাকা রক্ত এবং সামনে পড়ে থাকা একটা মাঝারি সাইজের গরুর মৃত দেহ দেখে কিছু বুঝতে বাকি রইলো না।
এরপর শুধু এতটুকু মনে আছে যে জ্ঞান হারাবার আগে জোরে কয়েকবার লা ইলাহা ইলাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবর বলেছিলাম। মহিলাটা চোখের পলকে মরা গরুটা রেখে আমার দিকে এগিয়ে এলো। এরপরে আমার কিছু মনে নেই।
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে আবিষ্কার করি আমাদের বাড়ির উঠানে। সামনে এলাকার সব মুরুব্বী এবং গঞ্জের বড় হুজুর বসে আছে। উনাদের কাছে শুনতে পাই রাতে রাস্তা দিয়ে ফেরার পথে আমাদের বাড়ির ৩ বাড়ির পরের রহমত আলি চাচা আমাকে দেখতে পান। এরপর আরও মানুষের সাহায্যে আমাকে বাসায় নিয়ে আসেন।
আশ্চর্যের ব্যাপার যে সেইদিন আমার থেকে একটু দূরে একটা আধ খাওয়া গরুর মৃত দেহ পাওয়া যায়। গরুটির শরীরের বাকি অংশ পাওয়া গেলেও মাথা থেকে পেট পর্যন্ত ছিল না।
ভয়ংকর ভূত পিচ্চি হান্নু
অনেক অনেক বছর আগের কথা, একদেশে এক গ্রাম ছিলো সেই গ্রামে অনেক মানুষ থাকতো। বড়রা হাটে মাঠে কাজ করতো আর ছোটরা স্কুলে যেত। সেই গ্রামের এক প্রান্তে অনেকগুলো বাঁশঝাড় ছিলো সেই বাঁশঝাড়গুলোর ভেতর অনেক পুরনো এক তেঁতুল গাছ ছিলো, তেঁতুল গাছটা এতই প্রকান্ড ছিলো যে দিনের বেলাতেও জায়গা অন্ধকার করে রাখতো। এই তেঁতুল গাছটা নিয়ে গ্রামে অনেক ভয়ংকর ভয়ংকর সব গল্প ছিলো, গ্রামের সবার ধারনা তেঁতুল গাছটাতে ভূত আছে তাই গ্রামের লোকেরা সেই দিকটা দিনের বেলাতেও যেতে সাহস পেত না।
সেই গ্রামে পল্টু নামের এক ছেলে থাকতো, পল্টু ক্লাস ফাইভ এ পড়ে, তার গায়ের রং শ্যামলা, হাত-পাগুলো লিকলিকে এবং চুলগুলো ছিলো পাখির বাসার মত। পল্টুর মা ছিলো না এমনকি পল্টুর কোন ভাই বোনও ছিলো না, ওর বাবা ছিলো কৃষক তারা একটা মাটির বাড়িতে থাকতো। পল্টু রোজ হেঁটে স্কুলে যেত, স্কুলে যাবার পথে দুরে তেঁতুল গাছটা দেখা যেত, গাছটা প্রায়ই বাতাসে অদ্ভুত রকম দুলতো। সেই দুলুনি দেখে পল্টুর অতদুর থেকেই ভয় ভয় লাগতো। অনেক বাচ্চাই ভয়ে সেদিকে তাকাতোও না। পল্টুকে সেদিক থেকে সাহসী বলা যেতে পারে।
একদিন পল্টু স্কুলে হোমওয়ার্ক করেনি বলে তার টিচার পুরোটা ক্লাস বেঞ্চের উপর দাড় করিয়ে রেখেছিলো। পল্টুর কি দোষ! সে তো সকালে হোমওয়ার্ক করতে বসেছিলো, তখন তার বাবা বললো - যা চুলগুলো কামারুর সেলুন থেকে কাটিয়ে আয়। কামারু নাপিতের পুরো নাম কামারুজ্জামান, এই ব্যাটা নাপিত না হয়ে কামার হলে মনে হয় নামকরন সার্থক হতো, কামার-উজ্জামান থেকে কামার। কামারু দেখতে খুবই নোংরা, মুখ থেকে সারাক্ষন ভকভক করে বিড়ির গন্ধ বের হয়, দাঁতগুলো হলুদ। বেটার দোকানে বাচ্চারা কখনো চুল কাটাতে চায় না, কারন সে বাচ্চাদের পেলে চুলগুলো এতই ছোট করে দেয় যে দুর থেকে মনে হয় মাথা টাক বেল। খুব কাছে আসলে তখন বোঝা যায় যে মাথায় ছোট ছোট চুল আছে। যে সব বাচ্চারা কামারুর দোকানে চুল কাটায় তাদেরকে অন্যান্য বাচ্চারা কয়েকদিন ধরে 'নাইড়া মাথা চাইড় আনা, চাবি দিলে ঘুরে না' বলে খেপায়। তার উপর কামারুর দোকানের চিরুনিগুলোও বেশ ময়লা দেখলেই গা ঘিনঘিন করে। তবে তার সেলুনের নামটা বেশ বাহারী 'গুলবাহার হেয়ার ড্রেসার'। সেই গুলবাহার হেয়ার ড্রেসারে চুল কাটাতে হবে শুনে পল্টু হোমওয়ার্ক না করেই তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বের হয়েছিলো আজ। যদিও বেঞ্চের উপর দাড়িয়ে থাকতে তার খুব একটা খারাপ লাগছিলো না।
দুপুর বারটায় স্কুল শেষে সবাই যার যার বাড়ি গেলো, পল্টু বাড়ির পথে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলো বাসায় ফিরলে তো সেই কামারুর সেলুনে যেতে হবে চুল কাটাতে, বাজারে অবশ্য আরো কয়েকটা নাপিতের দোকান আছে তবে সেগুলো একটু দুরে বলে বাবা সবসময় 'গুলবাহার হেয়ার ড্রেসার' এ নিয়ে যায়। নাহ, সে কিছুতেই কামারুর দোকানে চুল কাটাবে না, বন্ধুরা তাকে 'নাইড়া মাথা চাইর আনা, চাবি দিলে ঘুড়ে না' বলে খেপাবে এটা সে কিছুতেই হতে দিবে না। কোন মতে আজকের দুপুরটা পার করতে পারলেই আর চিন্তা নেই বিকেল হয়ে গেলে বাবা আর চুল কাটার কথা বলবে না। কিন্তু দুপুরটা কোথায় লুকিয়ে পার করবে? এই সব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ সে দেখলো দুরে তার বাবা রাস্তা দিয়ে আসছে, এটা দেখেই পল্টু কোন দিকে না তাকিয়ে এক দৌড় দিলো, সে খেয়ালও করলো না যে সে তেঁতুল গাছটার দিকে দৌড়াচ্ছে।
বাঁশ ঝাড় পার হয়ে একটা গাছের তলায় এসে থেমে সে হাঁপাতে হাঁপাতে হঠাৎ খেয়াল করলো
সে তেঁতুল গাছটার নিচে দাড়িয়ে আছে। গা ছমছমে সেই নিস্তব্ধ গাছের নিচে দাড়িয়ে পল্টু খুবই ভয় পেলো, সে একপা একপা করে সেখান থেকে যেই পালাতে যাবে তখনই গাছটার উপর থেকে নাকি কণ্ঠে কেউ কথা বলে উঠলো -
- কেঁ রেঁ তুঁই?
পল্টু কিছুতেই উপরে তাকাবে না চিন্তা করেও উপরে তাকালো, সেখানে আধো আলো আধো ছায়াতে সে শুধু একটা চিকন ডালে বসা বাচ্চাদের মত ছোট ছোট এক জোড়া পা দেখতে পেল। পল্টু যেই দৌড় দিবে তখনি ডাল থেকে একটা ভূতের বাচ্চা শুকনো পাতার মত উড়ে পল্টুর সামনে নেমে এলো। পিচ্চিটার গায়ের রং হালকা বেগুনী, মাথায় ললিপপের মত দু'টো শিং সেগুলো মনে হচ্ছে স্প্রিং দিয়ে বসানো একটু পরপর সেগুলো তিড়িংবিড়িং করে নড়ছে। পল্টুর সামনে এসে সে আবারো বললো-
- কেঁ রেঁ তুঁই! তোঁর নাঁম কিঁ?
পল্টু ভয়ে তোতলাতে তোতলাতে বললো-
- ইয়ে.... মানে.... আমি কিছু করিনি।
পল্টুর ভয় দেখে ভূতের বাচ্চাটা ফিক করে হেসে দিলো, সে কি প্রশ্ন করলো আর এই ছেলে কি উত্তর দেয়! তার মানে সে ভয় দেখাতে পেরেছে।
ভূতের বাচ্চাটার হাসি দেখে পল্টুরও বেশ হাসি পেল কারন ভূতের বাচ্চাটার সামনের নিচের দুটো দাঁত নেই।
ভূতের বাচ্চাটা এবার বেশ মন খারাপ করে ঠোঁট ফুলিয়ে বলে উঠলো-
- আঁমাঁকেঁ দেঁখে তুঁমি হাঁসঁছো! এঁজঁন্যই কেঁউ আঁমাঁকে পঁছঁন্দ কঁরে নাঁ। আঁমি নাঁকি ভূঁত হঁবাঁর যোঁগ্যঁই নঁই। এঁই দেঁখো নাঁ সঁবাঁই ভঁরদুঁপুঁরে বিঁলে গেঁছে মৃঁগেঁল মাঁছের কাঁটা চাঁবাঁতে আঁমাঁকে কেঁউ নেঁয় নিঁ, আঁমাঁকে কেঁউ পঁছঁন্দ কঁরে নাঁ।
পল্টুর এবার মন খারাপ হলো। আহারে বেচারা মৃগেল মাছের কাটা না পেয়ে কতই না কষ্টে আছে! সে এবার সাহস নিয়ে বললো -
- আমার নাম পল্টু। আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি, রোল নাম্বার ১৯। তোমার নাম কি?
সাথে সাথে ভূতের বাচ্চাটা বললো-
- আঁমাঁর নাঁম হাঁন্নু, আঁমি সাঁইঁজে ছোঁট তোঁ তাঁই সঁবাঁই আঁমাঁকে পিঁচ্চি হাঁন্নু বঁলে ডাঁকে। আঁমি তোঁ স্কুঁলে পঁড়ি নাঁ তঁবে আঁমি অঁনেঁক কিঁছু পাঁরি। ভূঁতদেঁর অঁনেঁক কিঁছু জাঁনঁতে হঁয়।
- কি কি জানো তুমি?
- এঁই যেঁমন ধঁরো উঁড়তে জাঁনি, ইঁচ্ছে কঁরলে অঁদৃশ্য হঁয়ে যেঁতে পাঁরি, পাঁনির নিঁচে যঁতক্ষঁন খুঁশি থাঁকতে পাঁরি।
- ও আচ্ছা।
- কিঁন্তু তুঁমি এঁই ভঁরদুঁপুরে এঁখাঁনে কিঁ কঁরছিঁলে?
- আমি তো কিছুক্ষন লুকিয়ে থাকতে এসেছিলাম। সরি তোমার গাছের কাছে এসে তোমাকে বিরক্ত করলাম।
- আঁরে সেঁটা কোঁন সঁমস্যা নাঁ। কিঁন্তু তুঁমি লুঁকিয়ে থাঁকতে এঁসেছো কেঁন?
পল্টু তখন পিচ্চি হান্নুকে পুরো ঘটনা খুলে বলে।
সব শুনে পিচ্চি হান্নু আবারো ফোকলা দাঁতে হাসি দিয়ে বললো -
- আঁমাঁর তোঁ চুঁলঁই নেঁই তাঁই চুঁল কাঁটাঁবাঁর ভঁয়ে আঁমাঁকে লুঁকাঁতে হঁয় নাঁ... হিঁ হিঁ হিঁ। তঁবে তুঁমি যঁদি চাঁও তোঁমাঁকে আঁমি সাঁহাঁয্য কঁরঁতে পাঁরি, আঁমি কাঁমাঁরু নাঁপিঁতকে ভঁয় দেঁখাঁতে পাঁরি যাঁতে সেঁ আঁর কঁখঁনো বাঁচ্চাদেঁর চুঁল নাঁ কাঁটাঁতে পাঁরে। কিঁন্তু তাঁর আঁগে তোঁমাঁকে আঁমাঁর দোঁস্তো হঁতে হঁবে, আঁমাঁর তোঁ কোঁন দোঁস্তো নেঁই তাঁই সঁব সঁমঁয় আঁমাঁর মঁন খাঁরাঁপ থাঁকে।
- ঠিক আছে তাহলে আমরা দু'জন বন্ধু হলাম।
- উঁহু, বঁন্ধু নাঁ। দোঁস্তো।
- আচ্ছা ঠিক আছে দোস্তো।
এরপর পল্টু আর পিচ্চি হান্নু ফিসফিস করে কিভাবে কামারু নাপিতকে শায়েস্তা করবে সেই মহাপরিকল্পনা করলো।
বাঁশঝাড় থেকে বেড়িয়ে পল্টু ভালো ছেলের মত বাসায় ফিরলো, বাবা বাসাতেই ছিলো, পল্টুকে দেখে বললো -
- এতক্ষন কোথায় ছিলিরে? চল গোসল করে খেয়ে নে, আমি আবার মাঠে যাবো।
পল্টু উদাস গলায় মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো-
- বাবা সকালে যে চুল কাটাবার কথা বলছিলে তখন তো স্কুলের সময় হয়ে গিয়েছিলো তাই যেতে পারিনি, এখন গিয়ে কাটিয়ে আসি তারপর গোসল করে খেয়ে নিবো।
বাবা ভাবলেন, বাহ! পল্টু তো লক্ষীছেলে হয়ে গেছে!
বাবা পল্টুকে নিয়ে গুলবাহার হেয়ার ড্রেসারে দিয়ে আবার মাঠের কাজে চলে গেল, যাবার আগে পল্টুকে লক্ষী ছেলের মত চুল কাটিয়ে বাসায় ফিরে গোসল করে ভাত খেয়ে পড়তে বসতে বলে গেল।
কেউ খেয়াল করলো না পল্টুর সাথে পিচ্চি হান্নু নামের ভূতের বাচ্চাটাও আছে, সে অনেক আগে থেকেই অদৃশ্য হয়ে পল্টুর সাথে সাথে হাঁটছে।
কামারুর সেলুন একেবারে ফাঁকা, পল্টুকে দেখে কামারু নাপিত তার সবক'টা হলুদ দাঁত বের করে কাঁচি আর ময়লা চিরুনী হাতে কাছে ডাকলো। পল্টু ভদ্র ছেলের মত উদাস মুখে চেয়ারে গিয়ে বসলো।
কামারু যেই পল্টুর চুলে চিরুনী চালাবে তখনি চিরুনীটা তার হাত থেকে ছুটে গিয়ে কামারুর মাথায় ঠাস ঠাস করে কয়েকটা বাড়ি দিয়ে মাটিতে পড়ে গেলো। কামারু ভড়কে গিয়ে 'ওরে বাপরে!' বলে চিৎকার দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো। শুধু পল্টু বুঝলো তার দোস্তো পিচ্চি হান্নু 'কাজ' শুরু করে দিয়েছে।
কামারু ভয়ে ভয়ে চিরুনীটা যেই ধরতে গেলো অমনি একটা কাঁচি ঘচাং ঘচাং করে কামারুর মাথার সামনের কিছু চুল কেটে দিলো। কামারু এবার ভয় পেয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলো-
- এ সব কি হচ্ছে! এ সব কি হচ্ছে!!
পিচ্চি হান্নু তখন অদৃশ্য থেকে বললো-
- হিঁ হিঁ হিঁ ... এঁই ব্যাঁটা কাঁমাঁরু! তোঁর চুঁল দাঁড়ি সঁব আঁজ শেঁভিং জেঁল মাঁখিয়ে চেঁছে নিঁবো... হিঁ হিঁ হিঁ !!!
কামারু ভয়ার্ত গলায় পল্টুর দিকে তাকিয়ে বললো-
- কে কথা বলছে!!
পল্টু হাই তুলতে তুলতে বললো-
- কই চাচা ! কে আবার কথা বলে!! আমি তো কিছুই শুনছি না।
পিচ্চি হান্নু আবারো বলে উঠলো-
- তুঁই বাঁচ্চাদেঁর পেঁলেঁই চুঁল এঁকেবাঁরে ছোঁট ছোঁট কঁরে দিঁস! আঁজ তোঁর মাঁথা টাঁকবেঁল কঁরে 'টাঁকডুঁম টাঁকডুঁম বাঁজাই' গাঁন কঁরবোঁ আঁর তোঁর মাঁথাঁয় ঢোঁল বাঁজাঁবো।
কামারু এবার প্রচন্ড ভয় পেলো। সে কাতর গলায় হাঁটু গেড়ে বললো-
- আমি আর বাচ্চাদের চুল ছোট করবো না। তুমি যা বলবে আমি তাই করবো শুধু আমার মাথায় ঢোল বাজিও না তাহলে একেবারে মারা যাবো।
- তাঁহলে শোঁন, এঁই যেঁ বাঁচ্চাঁটা বঁসে আঁছে চুঁল কাঁটাবাঁর জঁন্য তাঁর চুঁল সুঁন্দর কঁরে কেঁটে দেঁ, যঁদি পাঁরিস তঁবে 'রাঁহুল ছাঁট' দিঁস, আঁর এঁটাই তোঁর জীঁবনেঁর শেঁষ চুঁল কাঁটা এরঁপর থেঁকে তুঁই কাঁমাঁরের কাঁজ কঁরবি। ব্যাঁটা কাঁমাঁর-উঁজ-জাঁমাঁন কাঁল থেঁকে তুঁই সঁত্যিকাঁরের কাঁমাঁর হঁবি, মাঁটির হাঁড়ি পাঁতিল বেঁচবি।
কামারু নাপিত পিচ্চি হান্নুর কথা মত পল্টুকে সুন্দর করে চুল ছেটে দিলো, এরপর নাকে খত দিয়ে তার দোকানের সমস্ত কিছু বিক্রি করে মাটির হাড়ি পাতিলের দোকান দিলো। এরপর থেকে তার নাম হয়ে গেল 'কামারুকামার'।
আর কেউ কখনো জানতেও পারলো না পল্টুর একটা নতুন দোস্তো হয়েছে সেই দোস্তের সাথে পল্টু প্রায়ই ভরদুপুরেতেঁতুল তলায় হাডুডু খেলে।
No comments:
Post a Comment