প্রতারক চেনার উপায় |
মানুষ প্রতারণা করে থাকে সাধারণত কোন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কিংবা কারো
ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে। স্বার্থ বলতে অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থ,
মান-মর্যাদা ও প্রতিপত্তি লাভের স্বার্থ কিংবা ক্ষমতা লাভের স্বার্থ। আর
কারো ক্ষতি করার উদ্দেশ্য বা প্রতিহিংসাটা ব্যক্তিগত স্বার্থহানির জন্যও
হতে পারে; আবার ধর্মীয়, জাতিগত বা রাজনৈতিক কারণেও হতে পারে। তবে যে
উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, প্রতারকদের কিছু কমন আচরণগত আলামত ও বৈশিষ্ট্য
থাকে; যা চেনা থাকলে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, আর্থিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় যেকোন
পর্যায়েই প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকা যাবে। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অর্থ
হারানো থেকেও বাঁচা যাবে, দ্বীন হারানো থেকেও বাঁচা যাবে, কারো প্ররোচনায়
কোন নিরপরাধ আপনজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে পরে অনুতপ্ত হওয়ার আশংকা থেকেও
নিরাপদ থাকা যাবে এবং সর্বোপরি নিজের ও পরিবারের শরীর ও জীবনের ক্ষতিও
এড়ানো যাবে।
(১) বেশি কথা বলা(২) নিজের সততা ও সত্যবাদিতা জাহির করা
(৩) বেশি বেশি শপথ করা
(৪) অস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থবোধক কথাবার্তা
(৫) নিজের দু:খের কথা বলে মানুষের কাছে সহানুভূতি আদায় করা
(৬) অন্যের দু:খে হা-হুতাশ ও বিলাপ জুড়ে কৃত্রিম সহানুভূতি প্রকাশ করা
(৭) উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা ও মনগড়া ফতোয়া প্রদান
(৬) উদ্দেশ্য প্রকাশে মিথ্যাচার
(৭) মনগড়া তত্ত্বের প্রচার
(৮) সত্য গোপন ও সত্যের বিপরীত তথ্য প্রকাশ
(৯) মন্দ কাজে ভাল উদ্দেশ্য দাবি করা
(৮) দ্বিমুখী ভূমিকা ও আচরণ
(৭) নিজের সন্তানের চেয়ে অন্যদের কিংবা বাচ্চাদের চেয়ে বড়দের প্রতি বেশি দরদী হওয়া
(৮) স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে ইচ্ছাকৃতভাবে একেক সময় একেক রকম আচরণ করা
(৯) সামনে ও পিছনে দুই রকম হওয়া
(৯) মানুষের উপকারের চেয়ে মানুষকে পটানোর কাজে বেশি মনোযোগী হওয়া
(১০) উপকারের বিনিময়ে থাকার ও ঘাঁটি গাড়ার সুযোগ অন্বেষণ করা অথবা কোন স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা আদায় করা
(১১) বার বার ক্ষমা চাওয়া
(১২) বিশ্বাসের ব্লাকমেইল
(১২) মানুষের অক্ষমতার সুযোগ নিয়ে দোষারোপ করা
(১২) পরিবারের ক্ষেত্রে কর্তাব্যক্তিদের সাথে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা
(১৩) মানবসৃষ্ট দুর্যোগকে আল্লাহর ইচ্ছা বলে হালকা করার প্রবণতা
(১) ব্যবসায়ী, ডাক্তার, রাজনীতিবিদ যাদেরকেই প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত বকবক
করতে দেখবেন, তাদের থেকে দূরে থাকবেন। যারা সত্যিকার কাজের, তারা শুধু
সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য যতটুকু কথা বলা প্রয়োজন ততটুকুই বলবে। বড়জোর ধর্ম ও
দেশ নিয়ে কিংবা ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কুশলাদি নিয়ে কিছু কথাবার্তা ও
খোঁজখবর নিতে পারে। কিন্তু কাউকে যদি দেখেন আগ বাড়িয়ে যেচে শুধু ক্রেতা ও
সার্ভিস গ্রহীতার প্রতি অনাবশ্যক তোষামোদ ও গুণকীর্তন করছে, কিংবা নিজের
ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সুনাম ও সততা নিয়ে গল্প জুড়ে দিচ্ছে বা অন্যদের
বদনাম ও গোষ্ঠী উদ্ধার করছে, তাহলে বুঝবেন something is wrong। এমন লোকের
খপ্পরে পড়লে আর কিছু খোয়ানোর আগে যত তাড়াতাড়ি পারা যায় কেটে পড়ুন।
(২) যারা নিজেদেরকে সৎ, নীতিবান ও সরলমতি হিসেবে প্রচার করে, বাস্তবে তারাই সর্বাপেক্ষা অধিক মিথ্যাবাদী, কুচক্রী ও কুটনী হয়ে থাকে। এর ব্যতিক্রম কেউ দেখে থাকলে জানাবেন। "আমি মিথ্যা সহ্য করতে পারি না; আমি সরল ও সাদা মনের মানুষ, কোন প্যাঁচগোছ বুঝি না; আমি পিছনে কারো বদনাম করি না, প্রয়োজনে শুধু সামনে দু'-চারটা ধমক দেই; আমি নম্র-ভদ্র মানুষ, কোনদিন কারো সাথে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ করিনি; হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করা, অল্পতে মানুষের দোষ ধরা এসব প্রবণতা আমাদের মাঝে নেই"- এসব যারা দাবি করে, বুঝবেন তাদের মাঝেই ঘাপলা বেশি।