Friday, September 22, 2017

বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি নামে নতুন দল

আন্তর্জাতিক গণ-আদালতের রায়
‘রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে মিয়ানমার দোষী সাব্যস্ত’
ইত্তেফাক রিপোর্ট২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ২০:৪৪ মিঃ
রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে মিয়ানমার সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্থায়ী গণ আদালত শুক্রবার এই প্রতীকী রায় ঘোষণা করেছে। একইসঙ্গে মিয়ানমারে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে অবিলম্বে দেশটির ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিদেশে থাকা ব্যাংক হিসাব জব্দ, মিয়ানমারের বাইরে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারিসহ মোট ১৭ দফা সুপারিশ করেছে এই আদালত। মালয়েশিয়াভিত্তিক দ্য স্টার অনলাইনের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 
 
শুক্রবার আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তে যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আইনজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত সাত সদস্যের বিচারক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। তারা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা, কাচিন ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রায় ২০০ নির্যাতিত মানুষের সাক্ষ্য, ডকুমেন্টারি এবং বিশেষজ্ঞ মতামত পর্যালোচনা করে এই রায় ঘোষণা করেছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মালয়শিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ইন্টারন্যাশনাল পার্মানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনালে এই বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়। মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে গঠন করা এই ট্রাইব্যুনালে গত পাঁচ দিন ধরে টানা শুনানি চলে। 
প্রধান বিচারক ড্যানিয়েল ফিয়েরেস্টেইন এই রায় পড়ে শোনান। যিনি আর্জেন্টিনার সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা। ফিয়েরেস্টেইন বলেন, মিয়ানমার সরকার গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীকে কাচিন ও মুসলিম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালানোর জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে। অন্য বিচারকরা হলেন, মালয়েশিয়ার জুলাইহা ইসমাইল, কম্বোডিয়ার আইনবিদ হেলেন জার্ভিস, অস্ট্রেলিয়ার সিডনির মেকুইয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক প্রধান জিল এইচ বোয়েরিঙ্গার, ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার আইনজীবী নুরসিয়াবানি কাতজাসুংকানা, ইরানের মানবাধিকার আইনজীবী সাদি সদর ও ইতালির সুপ্রিম কোর্ট অব ক্যাসেসনের বর্তমান সলিসিটর জেনারেল নিলো রেসি।
 
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সু চি ও সেনাবাহিনীকে ‘চাপ’ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
 
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি ও দেশটির সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদেরকে ‘চাপ’ দেওয়া হচ্ছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শুধু তাকে (সু চি) চাপ দিচ্ছি না, আমরা দেশটির সেনাবাহিনীকেও চাপ দিচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ার্যাতমন জোসেফ ডানফর্ড মিয়ানমারের সেনাপ্রধানে সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এমন অবস্থা চলতে পারে না।
 
ইত্তেফাক/এমআই
 


রোহিঙ্গা সংকটে পশ্চিমা বিনিয়োগ হারাচ্ছে মিয়ানমার


প্রকাশিত: ১৭:০১, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭


রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে রয়েছে অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকার। সু চি’র হাত ধরে কথিত গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিপুল পরিমাণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের প্রত্যাশা করেছিল দেশটি। তবে রাখাইনে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ও রোহিঙ্গা সংকটের কারণে অনেক আন্তর্জাতিক কোম্পানি মিয়ানমারে বিনিয়োগ করা থেকে পিছু হটছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  কথিত গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসার হওয়ার পর বিপুল আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের আশা করেছিল মিয়ানমার। বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিনিয়োগের আগ্রহও দেখা গিয়েছিল। তবে রাখাইন রাজ্যে শোচনীয় মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে অনেক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানই পিছু হটছে। মিয়ানমারে বিনিয়োগ করলে সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা করছে এসব আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো।
প্রতিবেদন অনুসারে, মিয়ানমার সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য করে থাকে চীনের সঙ্গে। সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, জাপান এবং ভারতও মিয়ানমারের বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। অতীতে মিয়ানমারের ওপর যে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ হয়েছিল তাতে এই পাঁচ দেশের কেউই অংশ নেয়নি। তবে দেশটিতে পশ্চিমা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিমাণ খুবই কম। অবশ্য চলতি বছর কয়েক ধাপে সংস্কার আনার পর দেশটি আশা করছিল এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় থমকে যাওয়া অর্থনীতির দুয়ার খুলবে এবং সামরিক শাসনের আওতায় কয়েক দশকের অব্যবস্থাপনার অবসান হবে। মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের কর্মকর্তারা গত জুনে যখন ছয়টি ইউরোপীয় দেশ সফরে গিয়েছিলেন তখন পরিবহন, জ্বালানি ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ জোরদার হওয়ার আশা করছিলেন তারা। এখন আন্তর্জাতিক অবরোধগুলোর বেশিরভাগই তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে পশ্চিমা মুদ্রার বন্যা বয়ে যাওয়ার যে আশা করা হচ্ছে তা সু চি’র গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কথা না বলার কারণে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার মধ্যে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি। আইনজীবী, পরামর্শক ও লবিস্টদের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, ইউরোপীয় ও মার্কিন কোম্পানিগুলো এখন মিয়ানমারে বিনিয়োগে সুনামহানি হবে বলে আশঙ্কা করছে।
ইয়াঙ্গুনভিত্তিক বিনিয়োগ ফার্ম ফেয়ারক্যাপ পার্টনারস-র ম্যানেজিং প্রিন্সিপাল লুই ইয়ুং জানান, তাদের ব্যবসায়িক অংশীদারদের মধ্যে একটি মার্কিন ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানি মিয়ানমারে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত করেছে। তিনি বলেন, ‘ওই কোম্পানিটি মনে করছে এখনই বিনিয়োগ করার সঠিক সময় নয়। তারা সরকারের কাছ থেকে আরও আকর্ষণীয় সুযোগ দেওয়া হয় কিনা তা দেখতে চায়। রাখাইন পরিস্থিতিও বিনিয়োগে সহায়ক নয়।’
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক মাসে মিয়ানমারে বিনিয়োগকারী ও বিনিয়োগে আগ্রহী কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ জোরালো হয়েছে। এএফডি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বিদেশি ফার্মগুলোকে মিয়ানমারে বিনিয়োগ না করার আহ্বান জানাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক জ্বলানি কোম্পানি শেভরনের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের একটি দল বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রস্তাব করেছিল, মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস ফার্মের সঙ্গে করা শেভরনের চুক্তিটি যেন বাতিল করা হয়। নরওয়েভিত্তিক টেলিকম কোম্পানি টেলিনর মিয়ানমারে একটি মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। এ প্রতিষ্ঠানটিও মিয়ানমারে মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের বিনিয়োগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে শেভরন। বার বার চেষ্টা করেও টেলিনরের কাছ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ৪০০ মিলিয়ন ডলার। মিয়ানমারে মোট বিনিয়োগের ০.৫ শতাংশ পূরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ। দেশটিতে ইউরোপের বিনিয়োগের পরিমাণ এক দশমাংশ। চীন ও হংকং মিলে মোট বিনিয়োগের এক তৃতীয়াংশই পূরণ করে ফেলে। আর অন্য এক তৃতীয়াংশ পূরণ করে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট কমিটি অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড-র প্রধান বার্নড লানগে বলেন, গত সপ্তাহে তার প্রতিনিধি দল মিয়ানমারে অনির্দিষ্টকালের জন্য একটি সফর স্থগিত করেছে। কেননা, বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন-মিয়ানমার-র সম্ভাব্য বিনিয়োগ চুক্তি নিয়ে একটি ফলপ্রসূ আলোচনা করা যাচ্ছে না।
মিয়ানমার ট্যুরিজম ফেডারেশনের ভাইস চেয়ারম্যান খিন অং তুন ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, যেসব আন্তর্জাতিক ফার্ম মিয়ানমারে সম্মেলন করতে চেয়েছিল তারা এখন স্থান পরিবর্তনের কথা ভাবছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) নিক্কেই এশিয়া রিভিউতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে অং সান সু চি স্বীকার করেছেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। তবে তিনি বার বার জোর দিয়ে বলেন, দারিদ্র্যপূর্ণ রাখাইনের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করার অন্যতম চাবিকাঠি হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। তার দাবি, রাখাইনের পরিস্থিতি উন্নয়নে বিনিয়োগ একটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ১৬৩৯ কোটি টাকা সহায়তা প্রয়োজন: জাতিসংঘ


প্রকাশিত: ১৭:৫৫, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য পরবর্তী ছয় মাসে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ সহায়তার প্রয়োজন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৬৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিয়োজিত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ডি. ওয়াটকিনস নতুন এ হিসেব জানান।


ত্রাণের জন্য মরিয়া রোহিঙ্গারা
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৮ মিলিয়ন ডলার তথা ৬৩৯ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকা সহায়তার আবেদন করেছিল জাতিসংঘ। তবে এখনও বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা।
বাংলাদেশে নিয়োজিত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ডি. ওয়াটকিনস শুক্রবার ঢাকায় রয়টার্সকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রয়োজন বলে হিসেব করেছি। এ পরিমাণটা নিশ্চিত নয়, হাতে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে একটি ধারণাকৃত হিসেব এটি। জরুরি প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এ হিসেব করেছি এবং এ মুহূর্তে আমরা জানি পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত এ অবস্থা চলবে।’
নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার পর গত ২৫ আগস্ট সামরিক বাহিনীর অভিযান জোরদার হয়। নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে এরইমধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন চার লাখ বাইশ হাজার রোহিঙ্গা। 

  • রোহিঙ্গাদের জন্য সৌদি আরব থেকে এল ৯৪ টন ত্রাণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম


    বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সৌদি আরব থেকে ৯৪ টন ত্রাণ এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা ১০ মিনিটে ত্রাণবাহী উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
    আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে এই ত্রাণ হস্তান্তর করেছেন। এ নিয়ে ছয়টি দেশ উড়োজাহাজে মোট ৩৭৫ টন ত্রাণ রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠাল।
    জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বোয়িং-৭৪৭ নামের একটি উড়োজাহাজে সৌদি সরকার ৯৪ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে। এর মধ্যে ময়দা, ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর, চাল, তাঁবু ও কম্বল রয়েছে। আজ সকালে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা আমির ওমর সেলিমের কাছ থেকে এসব ত্রাণ গ্রহণ করেন। আগামীকাল শনিবার সৌদি সরকারের এই ত্রাণ কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের কাছে পাঠানো হবে।
    চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সৌদি আরব এক উড়োজাহাজে ৯৪ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে, যা রোহিঙ্গাদের জন্য এক চালানে সবচেয়ে বেশি ত্রাণ। এর আগে ভারত দুটি উড়োজাহাজে ১০৭ টন ত্রাণ পাঠিয়েছিল। হাবিবুর রহমান আরও বলেন, ‘সৌদি আরবের পাঠানো ত্রাণ আমাদের জেলা প্রশাসক গ্রহণ করেছেন। এগুলো কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠানো হবে।’
    জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, রোহিঙ্গাদের জন্য মালয়েশিয়া প্রথমে উড়োজাহাজে ১৪ টন ত্রাণ পাঠিয়েছিল। এরপর ভারত দুই উড়োজাহাজে ১০৭ টন, মরক্কো এক উড়োজাহাজে ১৪ টন, ইন্দোনেশিয়া ৮ উড়োজাহাজে ৭৭ টন এবং ইরান দুই উড়োজাহাজে ৬৯ টন ত্রাণ পাঠিয়েছে। এর মধ্যে ভোগ্যপণ্য, তাঁবু, কম্বল, কাপড় ও ম্যাট্রেস রয়েছে।
    চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মো. হাবিবুর রহমান জানান, ভারত সরকার মোট সাত হাজার টন ত্রাণ পাঠাচ্ছে। পানিপথে জাহাজে করে ভারতের বাকি ত্রাণ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া সরকারও পানিপথে জাহাজে চাল পাঠাচ্ছে। অন্য দেশগুলো পর্যায়ক্রমে উড়োজাহাজে ত্রাণ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

    Monday, September 18, 2017

    বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব বাতিল, উদযাপনের টাকায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা

    নাজমুল হাসান শান্ত
    নাজমুল হাসান শান্ত
    সহ-সম্পাদক, নিউজ এন্ড কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স
    Prabarna purnima 18 09 2017 1536475085
    প্রবারণা পূর্ণিমার প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে আকাশকে আলোকিত করতে রঙিন আলোর ফানুশ উড়ানো। সংগৃহীত ফাইল ছবি
    (বাসস) মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রতিবাদে আসন্ন প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উদযাপন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়।
    বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির ঢাকা শাখার মহাসচিব স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে আমরা আসন্ন ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ উদযাপন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
    প্রবারণা পূর্ণিমায় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তাদের ভেতরের অবিত্রতা ও কলুষতা থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য তিন মাসব্যাপী তাদের আশ্রমে নির্জন বাস করেন। একে আশ্বিনী পূর্ণিমাও বলা হয়। উৎসবটির প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে আকাশকে আলোকিত করতে রঙিন আলোর ফানুশ উড়ানো।
    এবার ফানুশ উড়ানো উৎসব বাতিল করে শুধুমাত্র ধর্মীয় আচার পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে স্বপন বলেন, ‘এ বছর উৎসবের অংশটুকু পালন করা হবে না। এই টাকা দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করা হবে।’
    এ বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠানটি পালন করা হবে। এদিকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আখ্যা দিয়ে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর সামরিক অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
    বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা উপা সংঘরাজ সত্যপ্রিয় মোহাথেরো বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের জাতিগত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির বিরুদ্ধে চলমান নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এর বিরোধিতা করছি।
    তিনি জানান, মিয়ানমার বৌদ্ধ রাষ্ট্র হলেও দু’দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নেই।
    একুশে পুরষ্কারপ্রাপ্ত এই বৌদ্ধ ভিক্ষু আরও বলেন, ‘তারা বৌদ্ধ হলেও আমাদের সঙ্গে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতিসহ অনেক পার্থক্য রয়েছে।’
    ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ মঠের প্রিন্সিপাল ধর্ম মিত্র মহাথেরো অসহিংস উপায়ে চলমান সংকট নিরসণের জন্য মিয়ানমার সরকার ও দেশটির জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
    চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দীপঙ্কর শ্রীজন বলেন, প্রভু বুদ্ধের প্রধান আদর্শ হচ্ছে অহিংসা পরম ধর্ম।
    তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সকল ধর্মের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য চাই। রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকারের নিপীড়ন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’
    বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশনের সভাপতি অসিম রঞ্জন বড়ুয়া বলেন, ‘মিয়ানমার সরকার যা করছে তা বৌদ্ধ ধর্মে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’
    বাংলাদেশ বৌদ্ধ ক্রিষ্টি প্রচার সংঘের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পি আর বড়ুয়া গৌতম বুদ্ধের অহিংস শিক্ষাকে মেনে চলার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
    বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের মহাসচিব অশোক বড়ুয়া জানান, মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা উৎপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
    তিনি বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
    এছাড়াও বিভিন্ন বৌদ্ধ সংগঠন মানববন্ধন, ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাসে স্মারকলিপি পেশ এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন বন্ধের উপায় বের করতে আলোচনাসহ নানা ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
    প্রিয় সংবাদ/শান্ত 

    মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান

    অনলাইন ডেস্ক

    মিয়ানমার সেনাবাহিনী। ছবি : রয়টার্সমিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার ঠেকাতে দেশটির ওপর চাপ বাড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সেই সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
    নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বৈঠকের আগ মুহূর্তে মিয়ানমারের চলমান সংকট সমাধানে চাপ দেওয়ার জন্য হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে আজ সোমবার এ আহ্বান এল।
    বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, চলমান সংকটের মুখে মিয়ানমারের চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে পালিয়ে গেছে। যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি শিশু রয়েছে। সেখানে তারা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন শরণার্থী যোগ হচ্ছে। এ কারণে সেখানে কর্মরত সাহায্য সংস্থাগুলো ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।
    গতকাল রোববার মিয়ানমার সরকার সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা সবাইকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। তাদের দাবি, গত আগস্ট মাসে পুলিশের চেকপোস্ট ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে যারা হামলা চালিয়েছিল, এই সব শরণার্থীর সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে।
    এই শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। অধিবেশনে তিনি মিয়ানমারের ওপর আরও বেশি চাপ দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাবেন।
    মানবাধিকার সংগঠন এইচআরডব্লিউ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান অত্যাচারের শাস্তিস্বরূপ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
    এক বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্থাটি জানিয়েছে, রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জাতিগত অভিযান চালাচ্ছে। এটা বন্ধ করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।
    জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে চলমান এই সংকটকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা এবং তাঁদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নিতে হবে। এইচআরডব্লিউর এশীয় অ্যাডভোকেসি পরিচালক জন সিফটন বলেন, ‘আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লে মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন।’

    আপনি জানেন কি? পৃথিবীতে ২৪ ঘন্টাই আজান তথা আল্লাহ্পাক এর নাম উচ্চারিত হচ্ছে। জানতে হলে এই পোস্টটা

    এবার প্রাইমারিতে ১০,০০০ শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর

          Post Name: Pre Primary Assistant Teacher Total Post: 10,000 Last Date of Application: 30 August 2018